
কক্সবাজারের পেকুয়ায় ছাত্রদলের দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় পেকুয়া শহীদ জিয়াউর রহমান উপকূলীয় কলেজ শাখার কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। বহিষ্কার করা হয়েছে উপজেলা ছাত্রদলের দুই নেতাকে। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে পেকুয়া চৌমুহুনী স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় সাহাব উদ্দিন (৬৫) নামের এক পল্লী চিকিৎসক আহত হয়েছেন। তাকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
প্রত্যক্ষদূর্শী সূত্রে জানা যায়, ১৬ সেপ্টেম্বর পেকুয়া শহীদ জিয়াউর রহমান উপকূলীয় কলেজ শাখায় ছাত্রদলকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ফরহাদ হোছাইন ও সদস্যসচিব মারুফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ৩১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
ওই কমিটিতে কলেজ শাখার সভাপতি করা হয় মোহাম্মদ ইসফাতকে ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় শাহাদাত হোসাইনকে এবং সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক করা হয় মোহাম্মদ আয়াতকে।
এরপর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের সই করা আরেকটি কমিটির বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে সভাপতি করা হয় মোহাম্মদ ইয়াছিন এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় মোহাম্মদ আয়াতকে, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক করা হয় সিকদারপাড়ার শাহাদাত হোসাইনকে।
এ নিয়ে তর্কাতর্কিতে জড়ান উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইদী রহমান এবং অন্য যুগ্ম আহ্বায়ক এরশাদ ও রাজু। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সময় পল্লী চিকিৎসক সাহাব উদ্দিনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে সাঈদী রহমান বলেন, ‘উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব তারা আমাদের মতামত না নিয়ে কলেজ কমিটি ঘোষণা করেছে। এতে অমত পোষণ করলে বিষয়টি উপজেলা বিএনপির সভাপতি বাহাদুর শাহকে অবগত করি। বাহাদুর শাহ আজ (সোমবার) সকাল ৮টায় উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি মিমাংসা করে দিবেন বলছেন। তা না মেনে সন্ধ্যায় তর্কে জড়িয়ে এ ঘটনা ঘটায় তারা। এরশাদ আমার বাবাকে কুপিয়ে জখম করে।’
এ ঘটনার পর পরই রাতে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহাদাত হোসেন রিপন ও সাধারণ সম্পাদক ফাহিমুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এরশাদুল আলম ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ রাজুকে বহিষ্কার করে। সে সঙ্গে পেকুয়া শহীদ জিয়াউর রহমান উপকূলীয় কলেজ শাখা ছাত্রদলের কমিটি স্থগিত করা হয়।
উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাজু বলেন, ‘জিয়া কলেজে ছাত্রদলের কমিটিকে কেন্দ্র করে সাঈদীসহ কিছু ছেলেদের সঙ্গে আমার বাকবিতন্ডা হয়। পরে আমরা চলে এলে এরশাদের ওপর হামলা করে তারা।’
আহত পল্লী চিকিৎসক সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে রাজনীতি করে। আমি তো করি না। তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হবে। কিন্ত আমার ওপর হামলা কেন, তা তো আমি জানি না।’
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ফরহাদ হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক মারুফুল ইসলাম জানান, ইসফাতের কমিটিটি বৈধ। তা আমরা দিয়েছি। পরে যেটি ফেসবুকে ছড়িয়েছে তা ভুয়া। তবে সংঘর্ষের ঘটনা পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে হয়েছে।
এ বিষয়ে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর হায়দার বলেন, ‘ঘটনা যাচাই-বাছাই করছি। পরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’