Home সারাদেশ দেশের সীমানা পেরিয়ে সাতক্ষীরার আম যাচ্ছে ইউরোপে

দেশের সীমানা পেরিয়ে সাতক্ষীরার আম যাচ্ছে ইউরোপে

0
দেশের সীমানা পেরিয়ে সাতক্ষীরার আম যাচ্ছে ইউরোপে
ছবিঃ সংগৃহীত

দেশের সীমানা পেরিয়ে এবারও ইউরোপের বাজারে রপ্তানি শুরু হয়েছে সাতক্ষীরার আম। গত ৯ বছর ধরে সাতক্ষীরা থেকে এই আম রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। বিশেষ করে ইতালিতে এই আমের কদর অনেক বেশি। ২০১৫ সালে প্রথম সাতক্ষীরার আম ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়।

‘সাতক্ষীরা ব্র্যান্ড’ এই নামে পরিচিত সাতক্ষীরার রপ্তানিযোগ্য আম এবারও যাবে ইউরোপের দেশ ইংল্যান্ড, সুইডেন ও ইতালিতে। আম পেড়ে বাগানেই প্যাকেটজাতকরণের পর রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো তা নিয়ে রওনা হয় বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে।

বরাবরের মতো এবারও সবার আগে বাজারে উঠেছে সাতক্ষীরার আম। আর এ কারণে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ীরা এখন সাতক্ষীরায়। সাতক্ষীরার আম আগে পাকে। সাতক্ষীরায় শেষ হলে রাজশাহীতে আম ভাঙার সময় শুরু হয়।

সাতক্ষীরার আমচাষি নাজমুল হাসান বলেন, সাতক্ষীরার আম আবহাওয়া ও জলবায়ুগত কারণে বেশ আগে পাকে এবং স্বাদে ও মানে অনন্য। কিন্তু রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রক্রিয়া শুরু হতে বেশ দেরি হয়ে যায়। আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে সাতক্ষীরা থেকে হাজার হাজার টন আম রপ্তানি করা সম্ভব।

সাতক্ষীরার আমচাষি ইদ্রিস আলী বলেন, আমার ২২ বিঘা জমিতে আম বাগান রয়েছে। কিন্তু এবার আম ভালো হয়নি। এজন্য মাত্র তিন মেট্রিক টন গোবিন্দভোগ ও হিমসাগর আম বাইরে পাঠাতে পেরেছি। এবার দাম পাওয়া যাচ্ছে ভালো। গত মৌসুমে যে আম ২৪০০/২৫০০ টাকা মণ বিক্রি করেছিলাম, এবার তার দাম ৩২০০-৩৪০০ টাকা মণ।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা থেকে ৩০০ মেট্রিক টন আম রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল সাতক্ষীরা সদর, কলারোয়া ও দেবহাটা উপজেলার ৩০০ জন চাষিকে।

তবে, সাতক্ষীরায় আমের ফলন কম হওয়া, ঘূর্ণিঝড় রেমালে ঝরে পড়া ও খরার কারণে আম আকারে বড় না হওয়ায় চলতি মৌসুমে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সংশয় দেখা দিয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবার সাতক্ষীরা থেকে এ পর্যন্ত ৫০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে সাতক্ষীরার অনেক গাছের আমে দাগ হয়ে গেছে। চলতি মৌসুমে আমের ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি রপ্তানির মান অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।

এছাড়া এবার আম আকারেও ছোট হয়েছে। তাই রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়বে। তারপরও সাতক্ষীরার এ আমের জন্য চেষ্টা অব্যাহত আছে আমাদের।

ঢাকার আম রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান তাসিন এন্টারপ্রাইজের সহকারী ব্যবস্থাপক হজরত আলী জানান, ইউরোপের বাজারে সাতক্ষীরার হিমসাগর আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ৯ বছর ধরে সাতক্ষীরার আম যাচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। বিশেষ করে ইতালিতে এই আমের কদর অনেক বেশি। তবে এবার আমের উৎপাদন ভালো না হওয়ায় রপ্তানিযোগ্য আম সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তারপরও চেষ্টা অব্যাহত আছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here