
স্থবির নীলাকাশ, পাহাড়ের নিস্তব্ধতা, ঝাউবাগান পেরোনো বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ আর সমুদ্রের টানা গর্জনের সঙ্গে মিশতে যাচ্ছে ট্রেনের হুঁইসেল। আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হচ্ছে ট্রেন। তবে বাণিজ্যিকভাবে কক্সবাজার থেকে ট্রেন চলবে ১ ডিসেম্বর এবং ঢাকা থেকে যাবে ২ ডিসেম্বর।
আজ চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মীয়মাণ রেলপথের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এর মাধ্যমে হচ্ছে আরও ১০০ কিলোমিটার নতুন পথ।
আজ সকাল ১১টায় কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেন চলাচলের জন্য উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমে সদর উপজেলার ঝিলংজা চান্দেরপাড়া এলাকায় নির্মিত আইকনিক রেলস্টেশনের উদ্বোধন করবেন এবং পরে ১৫টি কোচসংবলিত উদ্বোধনী ট্রেনে চড়ে রামু পর্যন্ত যাবেন তিনি। এরপর সেখান থেকে মহেশখালীতে আয়োজিত আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। আরও কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ে নেটওয়ার্কের ৪৮তম জেলা হিসেবে যুক্ত হচ্ছে কক্সবাজার। প্রকল্প অনুমোদনের প্রায় সাড়ে ১৩ বছর পর এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলো। মানুষ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সড়ক ও বিমানপথের পাশাপাশি এখন থেকে রেলপথেও আসতে পারবেন। ‘কু ঝিকঝিক’ শব্দে ট্রেন যাবে সাগর পাড়ে।
প্রথমে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত একটি ট্রেন চলাচল করবে। ধীরে ধীরে ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়ে আট জোড়া করা হবে। কিলোমিটার হিসেবে ট্রেনের যা ভাড়া আছে, সেটি বিবেচনা করেই ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা-কক্সবাজার পথে ট্রেনের সর্বনিম্ন ভাড়া ১২৫ টাকা। আর সর্বোচ্চ ১৭২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ট্রেনের নাম ও সময়সূচি এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। চট্টগ্রাম থেকেও আলাদা ট্রেন কক্সবাজার পর্যন্ত চলাচল করবে বলে জানায় রেল কর্তৃপক্ষ।
আন্ত নগর, লোকাল, কমিউটার—সব ধরনের ট্রেনই চলাচল করবে নতুন এই পথে। ফলে শুধু ঢাকা বা দেশের অন্যান্য জেলার সঙ্গেই নয়, চট্টগ্রামের সঙ্গে দক্ষিণ চট্টগ্রামের যোগাযোগের নতুন পথ তৈরি হলো এতে।