ওয়ানডে বিশ্বকাপের সুপার লিগে রীতিমতো উড়তে থাকা বাংলাদেশ, বিশ্ব আসরের ঠিক আগে যেন ছন্দহীন। দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদের ঘরের মাটিতে সিরিজ হারিয়ে আসা টাইগাররা নিজ দেশে হেরেছে অপেক্ষাকৃত দুর্বল আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এ সিরিজ হারের জন্য অবশ্য তামিম ইকবালের দায় দেখছেন বর্তমান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাতকারে আফগান সিরিজ হারের জন্য সরাসরি তামিমকে অভিযুক্ত করেন সাকিব। বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্বকাপের আগে ভারতের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগে সাক্ষাতকারটি দেন তিনি।
ওয়ানডে সুপার লিগ, যেটাকে ধরা হয় বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব। সেখানে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারতের মতো পরাশক্তিদের ভিড়ে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল সেরা তিনে। কঠিন প্রোটিয়া দুর্গে সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা। ঘরের মাঠে হারিয়েছিল শক্তিশালী ভারতকে। গত বছর পর্যন্ত ওয়ানডে বিশ্বকাপ নিয়ে তাই ক্রিকেটার থেকে সমর্থক সবাই বড় কিছুর প্রত্যাশায় ছিল।
কিন্তু বিশ্বকাপের বছরে সবকিছু যেন ওলট-পালট হয়ে গেল। ইংল্যান্ডের পর, অপেক্ষাকৃত দুর্বল আফগানিস্তানের বিপক্ষেও সিরিজ হারল বাংলাদেশ। আর শেষদিকে তো নিউজিল্যান্ডের দুর্বল দলের বিপক্ষে বাজে একটি অভিযান শেষে বিশ্বকাপের বিমান ধরেছে টাইগাররা। বিশ্বকাপের আগে প্রিয় ফরম্যাট-ওয়ানডেতে লাল সবুজের প্রতিনিধিদের এমন পারফরম্যান্সে হতাশ সবাই।
সাক্ষাতকারে সাকিবের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, দলের এই অবস্থার জন্য কোচের কোনো দোষ দেখছেন কিনা। বিশেষ করে ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারে।
জবাবে সাকিব বলেন, “আফগানিস্তানের সঙ্গে সিরিজ হারাটা আমি পুরোপুরি একজনের দোষ বলব, ক্যাপ্টেন (তামিম)। এক ম্যাচ পর আমাদের হাতে আরও দুই ম্যাচ ছিল। আমরা তৃতীয় ম্যাচে ঠিকই কামব্যাক করেছি। কিন্তু একটা ম্যাচে আমাদের সময় লেগেছে। এটা আর কারও দোষ না, পুরো সিরিজটার দোষ একজনের। বিশ্বের আর কোথাও দেখি নাই, অধিনায়ক এসে আবেগী হয়ে বলছে, ‘আমি আর খেলব না ভাই, ক্রিকেট।’ এটা আমি আমার জীবনে প্রথমবার দেখলাম।”
গত ৫ জুলাই আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচ হারার পরদিন আচমকা ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন তামিম। হুট করে অধিনায়কের এমন সিদ্ধান্তের কারণে দল বাজে পরিস্থিতিতে পড়েছিল বলে মত সাকিবের। তামিমের দায়িত্ববোধ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
সাকিব বলেন, ‘আমার ধারণা, দায়িত্ববোধ থাকলে কোনো ক্রিকেটার এমন করতো না। আমার মনে হয়, এটা দলকে অনেক বাজে একটা পরিস্থিতে ফেলে দিয়েছে। ওটাই এখনো আমাদের রিকভারি করতে সময় লাগছে। যেটা আমি অনুভব করি।’
বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে অধিনায়ক বদল হওয়াকেও ভালোভাবে দেখছেন না তিনি। এটার পেছনে দায় দেখছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেরও। তার মতে, ২০১৯ বিশ্বকাপের পরই ঠিক হয়ে যাওয়া উচিত ছিল, পরের বিশ্বকাপে কারা খেলবে আর কারা নেতৃত্ব দেবে।
টাইগার অলরাউন্ডার বলেন, ‘(একটা টুর্নামেন্টের জন্য) আপনার দরকার ২-৩ বছরের লম্বা প্রক্রিয়া। ২০১৯ এর বিশ্বকাপের পর সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত ছিল, কে অধিনায়ক হবে, কে সহ-অধিনায়ক হবে। কে নেতৃত্ব দেবে, না দেবে। হ্যাঁ, ২০-২৫ জনের দল থেকে ১৫ জন যাবে।’