Homeসর্বশেষপ্রধানমন্ত্রীর বৈঠক নিয়ে মানবজমিনের প্রতিবেদন ডাহা মিথ্যা: অধ্যাপক আরাফাত

প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক নিয়ে মানবজমিনের প্রতিবেদন ডাহা মিথ্যা: অধ্যাপক আরাফাত

যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানের বৈঠক নিয়ে দৈনিক মানবজমিন মিথ্যাচার করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ঢাকা-১৭ আসনের এমপি অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত।

সম্প্রতি এক ভিডিওবার্তায় প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক বিষয়ে তৈরি করা প্রতিবেদনটি মনগড়া বলেও দাবি করেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের দূতাবাসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আলোচিত বিষয় নিয়ে অধ্যাপক আরাফাত বলেন, মূলত জেক সুলিভান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করতে আমাদের অ্যাম্বেসিতে আসেন। যিনি বাস্তব অর্থে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পরেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বৈঠকে বসে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের নানা দিক নিয়ে কথা বলেন। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদারের মধ্যদিয়ে বিশ্ব এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যুকে এগিয়ে নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বৈঠকে উপস্থিত ব্যক্তিদের মাধ্যমে আলোচনার বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেয়েছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বৈঠকে আগামী নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা হবে। এর মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ধারাকে এগিয়ে নেয়া হবে।

অধ্যাপক আরাফাত দাবি করেন, বৈঠকে এর বাইরে কোনো আলোচনা হয়নি। মানবজমিনের প্রতিবেদনে মনগড়া তথ্য দেয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের এই এমপি বলেন, মানবজমিনের প্রতিবেদনে চারটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করা হয়। প্রথমেই বলা হয় নির্বাচনের কথা। প্রতিবেদনে বলা হয়, জেক সুলিভান স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। তবে সুলিভানের স্বভাবসুলভ ভঙ্গিটা কী, তা মানবজমিন কীভাবে জানে বিষয়টি বোধগম্য নয়। আর উত্তেজনাকর কোনো পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়নি।

প্রতিবেদনে বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন এবং তার দলসহ বিভিন্ন মহল থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি তোলা হয়েছে- এমন তথ্যও দেয়া হয়েছে। আরাফাত বলেন, এ বিষয়ে বৈঠকে একটি শব্দও আলোচনা হয়নি। মানবজমিন একটি ডাহা মিথ্যা কথা উল্লেখ করেছে। এছাড়া প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী নোবেলজয়ী প্রফেসর ইউনূসকে নিয়ে কথা হয়েছে। এটি আরও একটি ডাহা মিথ্যা কথা। আলোচনায় প্রফেসর ইউনূসের নামটিও উচ্চারিত হয়নি।

তিনি বলেন, ওয়াশিংটনে আমাদের অ্যাম্বেসি বা আমাদের এখানে দ্বিপাক্ষিক বা জাতীয় পর্যায়ে যত আলোচনা হয়েছে, কখনও কোনো আলোচনায় প্রফেসর ইউনূস ইস্যুতে কোনো কথা হয়নি। তারাও করেনি, আমাদেরও কখনও করার প্রয়োজন হয়নি। এসব নিয়ে আলোচনাই হয়নি। এগুলো নিয়ে অপপ্রচার করে মাঠ গরমের অপচেষ্টা করা হয়েছে।

অধ্যাপক আরাফাত বলেন, প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নানা কারণে আলোচনা অন্যদিকে মোড় নেয়। নাম প্রকাশ না করার একটি সূত্রের বরাত দেয়া হয়। কিন্তু মানবজমিন বিভিন্ন সময়ে নাম প্রকাশ না করার সূত্র দাবি করে মিথ্যা কথা চালিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আলোচনায় নাকি হঠাৎ দরকষাকষি শব্দটি গুরুত্ব পায়। মার্কিন কর্মকর্তারা স্পষ্ট করেই বলেন, তাদের পক্ষে এ নিয়ে কিছু করা সম্ভব নয়। আইন তার নিজস্ব গতিতেই চলবে। এখানেই আলোচনা থেমে যায়। কিন্তু এটিও একটি ডাহা মিথ্যা কথা। আসলে খুবই সুন্দর পরিবেশে আলোচনা শুরু হয়। সুন্দর পরিবেশে আলোচনা চলে এবং শেষ হয়। এখানে কোনোভাবেই আলোচনা থেমে যাওয়ার কোনো বিষয় ঘটেনি।

ক্ষমতাসীন দলের এই এমপি ভিসা নীতি নিয়ে বিএনপির উৎসাহ নিয়েও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ভিসা নীতির কথা বলার পর বিএনপি বেশ খুশি হয়েছিল। পরে দেখা গেল নির্বাচনে বাধা দানকারী সে যেই দলেরই হোক না কেন, ভিসা নীতির আওতায় আসবে। যখন ভিসা নীতি কার্যকরের তথ্য এলো তখনও বিএনপি খুশি হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র। উল্টো জানানো হলো, এই নীতি যাদের ওপর কার্যকর হয়েছে, সেখানে বিরোধী দলও আছে। তার মানে এই নীতিতে বিএনপির আসলে লাভ হচ্ছে না।

অধ্যাপক আরাফাত মনে করেন, আসলে আমেরিকা যা করছে, তা তাদের ভূরাজনৈতিক ইন্টারেস্ট থেকেই করছে। কিন্তু বিএনপি ভাবছে, আমেরিকা তাদের জন্য অনেক কিছু করে দেবে। আর যদি করেই দিতো তাহলে ভিসা নীতিতে তাদের নাম আসতো না। এ বাস্তবতায় বিএনপি দিশেহারা হয়ে নিজেদের পছন্দের নানা পত্রিকায় জেক সুলিভানের বৈঠক নিয়ে গল্প ফেঁদে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, এই অক্টোবরে কিছু হচ্ছে না। অক্টোবর পার হয়ে যাবে, নভেম্বর পার হবে। নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা হবে। ডিসেম্বর আসবে, জানুয়ারিতে নির্বাচন হবে।’
বিএনপি এই নির্বাচনে না এলে তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকে তাকবে কিনা তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন অধ্যাপক আরাফাত।

সম্পর্কিত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন