Home সারাদেশ নোয়াখালীতে দুই এমপির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর

নোয়াখালীতে দুই এমপির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর

0
নোয়াখালীতে দুই এমপির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর
ছবিঃ সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচির মধ্যে নোয়াখালীর দুই সংসদ সদস্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও একাধিক সরকারি কার্যালয়ে অগ্নিকাণ্ড ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

রোববার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।

এর আগে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে নোয়াখালীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা এক দফা দাবিতে নানা স্লোগান দেন।

জানা যায়, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে পৌরসভা কার্যালয়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ভূমি অফিস ও কৃষি অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পৌরসভা কার্যালয়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এছাড়াও আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে রাখা দুটি গাড়ি। এ ছাড়া নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম ও  নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বেলা সাড়ে তিনটার দিকে হাজারো আন্দোলনকারী চৌরাস্তায় বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা চৌরাস্তাসংলগ্ন চৌমুহনী পৌরসভা ভবনের সামনে দুটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন। পরে পৌরসভা ভবনের ভেতরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর আগে তারা গ্লোব ফ্যাক্টরিতে হামলা ও ভাংচুর করেন। এরপর বিক্ষোভকারীরা চৌমুহনী বাজারে যান। সেখানে তারা সমবায় মার্কেট, কিরণ ইম্পেরিয়ার নামের দুটি প্রতিষ্ঠানে হামলা চালান। পরে বিক্ষোভকারীরা চৌমুহনী রেলগেট–সংলগ্ন নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের মালিকানাধীন  মোরশেদ আলম কমপ্লেক্স এ হামলা ও ভাঙচুর করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও বলেন, হামলাকারীরা বেগমগঞ্জর সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরনের গ্লোব ফ্যাক্টরি, প্রধান কার্যালয়, বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে হামলা চালায়। এরপর চৌরাস্তা এলাকায় মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। এর আগে দুপুরে নোয়াখালী শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিথুন ভট্ট ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ইমন ভট্টর মাইজদীর বাড়িতে হামলা করা হয়। এসময় পাঁচটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

নোয়াখালী শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিথুন ভট্ট নিজের বাসভবনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুপুরে আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে পাঁচটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তবে হামলার সময় আমি বাসায় ছিলাম না। হামলার পরও তারা অনেকক্ষণ আমার বাসা ঘিরে রাখে। এ সময় ৫টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

বেগমগঞ্জের স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা বলেন, আন্দোলনকারীরা সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে চৌমুহনী চৌরাস্তা এলাকার দিঘিরপাড়ে অবস্থিত বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আগুন নেভান।

নোয়াখালী ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ বলেন, বিকেলে একদল দুর্বৃত্ত চৌমুহনী ফায়ার সার্ভিসে হামলা চালিয়ে গাড়িসহ কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও আসবাবপত্রে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বের হতে পারেনি তারা ২০ জন ফায়ার কর্মীকে পিটিয়ে তাদের টাকা মোবাইল লুট করে নিয়ে যায়।

তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক সমন্বয়কের কাছে হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়ে অস্বীকার জানান। তারা  বলেন, বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে সহিংস ঘটনার সঙ্গে আমাদের আন্দোলনের কোনও সম্পর্ক নেই।

নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, বিভিন্ন সরকারি অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার খবর আমরা পেয়েছি। কে বা কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের কোনও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া হয়নি। ওই সময় কোনও গুলিও ছোড়া হয়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here