Homeরাজনীতিবিএনপির প্ল্যান ‘বি’

বিএনপির প্ল্যান ‘বি’

বিএনপির প্রথম পরিকল্পনা ছিল ধ্বংসাত্মক জ্বালাও-পোড়াও এবং অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে সরকারকে চাপে ফেলা, সরকারকে কোণঠাসা করে ফেলা, দেশ অচল করে দিয়ে দাবি আদায় করা। কিন্তু টানা তৃতীয় দফায় অবরোধ কর্মসূচি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। আজকের অবরোধ কর্মসূচিতে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাঙচুর ছাড়া জনজীবন ছিল প্রায় স্বাভাবিক। বিশেষ করে ঢাকা শহরে আজ গাড়ি ঘোড়া একেবারে স্বাভাবিক দিনের মতো চলাফেরা করছে। এই পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলোতে মানুষ যে অবরোধ মানবে না এটা মোটামুটি পরিষ্কার। এই অবস্থায় বিএনপি কি করবে?

বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে এখন বিএনপি প্ল্যান বি-তে যাবে। বিএনপির প্ল্যান বি কি। বিএনপির বিভিন্ন সূত্র বলছে, বিএনপি প্ল্যান এ ছিল যে আন্দোলনের মাধ্যমে, ভাঙচুর সহিংসতা করে তারা একটি পরিস্থিতি তৈরি করবে যেখান থেকে সরকার পতনে বাধ্য হবে। আর প্ল্যান বি হল বিএনপি আন্দোলনের এক পর্যায়ে নাটকীয় ঘোষণা দেবে। নাটকীয় ঘোষণার মাধ্যমে তারা নির্বাচনে যাবার সিদ্ধান্ত জানাবে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তারা মনোনয়ন পত্র জমা দেবে এবং সরকারের পক্ষপাতিত্ব করছে, নির্বাচন বাধাগ্রস্থ করছে ইত্যাদি নানা অজুহাত উপস্থাপন করবে। এই ধরনের অজুহাতের মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড় করাবে এবং এক পর্যায়ে তারা একযোগে নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহার করবে। এর ফলে আওয়ামী লীগের জন্য নির্বাচন করা কঠিন হয়ে পড়বে৷ ফলে আবার একটা একতরফা নির্বাচনের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে। অধিকাংশ এলাকায় আওয়ামী লীগের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী থাকবে না। এর ফলে এই নির্বাচন আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার সঙ্কটে পড়বে। ফলে নির্বাচন বানচাল হয়ে যাবে।

বিএনপির প্রধান লক্ষ্য হল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করা। এ লক্ষ্যেই তারা এক দফা আন্দোলন করছে এবং এই লক্ষ্যেই তারা বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন করছে। সেই আন্দোলনের অনেকগুলো পরিকল্পনা তাদের সামনে আছে বলেই বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছে। তার মধ্যে প্রথম পরিকল্পনা ছিল জ্বালাও-পোড়াও ভাংচুর করে একটি নারকীয় পরিস্থিতি তৈরি করা এবং সরকারকে বেকায়দায় ফেলা। এই সমস্ত নারকীয় ঘটনা এবং ধ্বংসাত্মক তৎপরতার সমস্ত দায় সরকারের ওপর চাপিয়ে দেওয়া।

২৮ অক্টোবরে বিএনপি উসকানিমূলক ভাবেই প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে। বিএনপি হামলা করেছে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে। এ সবের ফলে পুলিশ মারমুখী হবে, গুলি করবে এবং বিএনপির বেশ কিছু কর্মীরা মারা যাবে। এই লাশ নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করতে চেয়েছিল। কিন্তু সেদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ করে পুলিশ চরম ধৈর্যের পরিচয় দেওয়ার কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বরং পুরো ঘটনার ভিডিও চিত্র প্রকাশিত হওয়ার পর বিএনপির ষড়যন্ত্র এবং আত্মঘাতী রাজনীতি জনসমক্ষে উন্মুক্ত হয়ে গেছে। এর ফলে প্ল্যান এ এখন আর কাজে দিচ্ছেনা। অবরোধ বা ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি গণধিকৃত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এখন বিএনপির বি এর প্রস্তুতি শুরু করেছে। প্ল্যান বি এর অংশ হিসেবে বিএনপি যেকোনো মুহূর্তে নাটকীয় ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার কথা বলবে৷

তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে, আসলে বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যাবে না। বরং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, নির্বাচন বানচাল করার লক্ষ্যেই তারা এই প্ল্যান বি-তে যাবে। তবে প্ল্যান বি কবে থেকে, কিভাবে শুরু হবে সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা জানা যায়নি। একটি সূত্র বলছে, প্ল্যান বি শুরু হবে আসলে যখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে তখন থেকেই। তার প্রস্তুতি বিএনপির আছে।

সম্পর্কিত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন