Homeজাতীয়আজ কক্সবাজার রেললাইনসহ ১৯ প্রকল্প আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

আজ কক্সবাজার রেললাইনসহ ১৯ প্রকল্প আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

কক্সবাজার রেলস্টেশন উদ্বোধন করতে আজ শনিবার (১১ নভেম্বর) কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও তিনি প্রায় ৮৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এর মধ্যে রেললাইনসহ ১৫টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৪টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক শাহিন ইমরান জানান, প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে ১১টি প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এসব প্রকল্পে মোট ব্যয় প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকা।

প্রকল্পগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নির্মিত মাতারবাড়ী ১৩০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ সংযোগ।

এছাড়াও রয়েছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম উদ্বোধন, কক্সবাজারকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা এবং কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উদ্বোধন।

শনিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার সদরে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের উদ্বোধনসহ অন্যান্য প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করবেন। ভাষণ দেবেন সুধী সমাবেশে। বিকেল ৩টায় মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেলের উদ্বোধন ও প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এরপর মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেবেন। বিকেলে তিনি ঢাকা ফিরে আসবেন।

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মফিজুর রহমান জানান, শনিবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সামনে রেখে কয়েকবার পরীক্ষামূলক ট্রেন চালিয়ে দেখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর শুরু হবে রেল চলাচল।

২০১০ সালে ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকার এই রেললাইন প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। ওই প্রকল্পে সিঙ্গেল লাইন মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু ট্রান্স এশীয় রেলপথের সঙ্গে সংযুক্ত হতে ব্রডগেজ রেলপথ লাগবে। তাই প্রকল্প সংশোধন করা হয় ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল। জমি অধিগ্রহণসহ প্রকল্পের বিভিন্ন অনুষঙ্গে ব্যয় দাঁড়ায় ১৬ হাজার ১৮২ কোটি টাকা।

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের আওতায় ৩৯টি বড় আকারের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রায় ২২৩টি ছোট সেতু ও কালভার্ট, বিভিন্ন শ্রেণির ৯৬টি লেভেলক্রসিং নির্মাণ করা হয়েছে। হাতি চলাচলের জন্য আলাদা করে আন্ডারপাস করা হয়েছে।

কক্সবাজারে আইকনিক স্টেশন নির্মাণের পাশাপাশি নির্মাণ ও সংস্কার করা দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজরা, ইসলামাবাদ এবং রামু রেলস্টেশন।

উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেলের ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) সচিব ওমর ফারুক জানান, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) থেকে অধিগ্রহণ করা চ্যানেলটি চালুর জন্য সিপিএ সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কন্টেইনার জেটি এবং ১৮.৫ মিটার ড্রাফ্টসহ ৩০০ মিটার দীর্ঘ একটি বহুমুখী জেটি এবং একটি কন্টেইনার ইয়ার্ডসহ বন্দরের অন্যান্য সুবিধার নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

সিপিজিসিবিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে কোম্পানিটি ইতিমধ্যেই মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেলটি সিপিএ চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহেলের কাছে হস্তান্তর করেছে। ২০২৬ সালে বন্দরটির কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সিপিজিসিবিএল ইতোমধ্যে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের অংশ হিসাবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এই চ্যানেলের মাধ্যমে ১২০টি জাহাজ চলাচলের জন্য চ্যানেল এবং দুটি জেটি নির্মাণ করেছে।

দেশের প্রথম এবং একমাত্র গভীর সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পটি প্রায় ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে হাতে নেওয়া হয়।

২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী মাতারবাড়ী বন্দর নির্মাণের জন্য চ্যানেলের প্রস্থ ১০০ মিটার বাড়িয়ে ৩৫০ মিটার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন