Home জাতীয় ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশকে উল্টো দিকে নিয়ে যাওয়া হলো : জাফর ইকবাল

১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশকে উল্টো দিকে নিয়ে যাওয়া হলো : জাফর ইকবাল

0
১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশকে উল্টো দিকে নিয়ে যাওয়া হলো : জাফর ইকবাল

দেশের মানুষকে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর এক রাতের ভেতরে বাংলাদেশকে উল্টো দিকে নিয়ে যাওয়া হলো। আমাদের বর্তমান যত সংকট সব তখন থেকেই শুরু। কিছুদিন পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করল, মুক্তিযুদ্ধে কি এত মানুষ মারা গেছে? রাজাকারদের গাড়িতে মন্ত্রীর পতাকা তুলে দেওয়া হলো। আমাদের আর এমন ভুল করা চলবে না।’

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার ঠাঁই নেই’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় জাফর ইকবাল এসব কথা বলেন।

এ সময় প্রাথমিক শিক্ষা থেকেই শিশুদের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্ধুদ্ধ করার শিক্ষা দিতে হবে বলে মত দেন জাফর ইকবাল। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা থেকেই শিশুদের শেখাতে হবে আমরা মানুষ। ভ্রাতৃত্ববোধের শিক্ষা দিতে হবে।

তাদের জানাতে হবে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, সাঁওতাল এসব পরিচয় মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে।’
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি হাজার বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষের মনোজগতে বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘হাজার বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষ সম্প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করছে। এখানে সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ ছড়িয়ে পড়ার দায় আমাদেরই। আমরা তাদের একটি ভালো শিক্ষা ব্যবস্থা দিতে পারিনি।

আমি খুবই আশাবাদী লোক। আমি নিরাশ হতে চাই না।’
সভাপতির বক্তব্যে সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দেশে অনেক উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ চলছে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি থাকলেই দেশে উন্নয়ন ও গণতন্ত্র দীর্ঘস্থায়ী হবে। আমরা বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষের কোনো ছায়া দেখতে চাই না।

বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ আছে। সেটাই আমাদের মূল শক্তি।’
সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ও সম্প্রীতি বাংলাদেশের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘নির্বাচন এলে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার আবির্ভাব ঘটে। ধর্মের অপব্যবহার করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা হয়। আমরা চাই রাজনীতি যা-ই হোক, সরকার যেই হোক―দেশের হাজার বছরের সম্প্রীতি যেন বজায় থাকে।’

আইনজীবী ও সম্প্রীতি বিশেষজ্ঞ ফারজানা মাহবুব বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং নারীর অধিকার না থাকলে গণতন্ত্র টেকসই হয় না। ধর্মনিরপেক্ষতা এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদকে তৃণমূলে ছড়িয়ে দিতে না পারলে সাম্প্রদায়িকতা শেষ হবে না।’

গোলটেবিল আলোচনায় আরো অংশ নেন সাংবাদিক প্রণব সাহা, সাংবাদিক নুর সাফা জুলহাস, মোস্তফা হোসেন, গ্রাম থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তাওহীদ হাসান ময়না। উপস্থিত ছিলেন সারা দেশ থেকে আগত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here