Homeসারাদেশকয়লার সঙ্গে মিশে গেছে স্বর্ণ, বস্তায় ভরে রক্ষার চেষ্টা ব্যবসায়ীর

কয়লার সঙ্গে মিশে গেছে স্বর্ণ, বস্তায় ভরে রক্ষার চেষ্টা ব্যবসায়ীর

রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার কৃষি মার্কেটে লাগা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে আড়াই শতাধিক দোকান। পোড়া ছাইয়ের স্তূপ থেকে মূল্যবান সামগ্রী খোঁজার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষি মার্কেটের ‘গ’ সিরিয়ালের ৭৭ নম্বর দোকান। হক জুয়েলার্স নামের দোকানটির মালিক ও তার কর্মচারীরা আগুনে পুড়ে যাওয়া কয়লা সাবধানতার সঙ্গে বস্তায় ভরে রাখছেন।

কয়েকজন কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দোকানে কয়েক কোটি টাকার স্বর্ণ ও গয়না ছিল। আগুনের তীব্রতার কারণে দোকানের কাছাকাছি আসার সুযোগ হয়নি। তাই বন্ধ দোকানের ভেতরে থাকা সকল স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্র পুড়ে একাকার হয়ে গেছে। তাই তারা সবকিছুই বস্তায় ভরে সংরক্ষণ করছেন।

হক জুয়েলার্সের দোকানটির মালিক মোহাম্মদ আলী ও মিজানুর রহমান নামের দুই ভাই। দীর্ঘদিন ধরে স্বর্ণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। গত সাত বছর আগে তারা কৃষি মার্কেটের এই দোকানটি ভাড়া নেন। এর আগে বসুন্ধরা শপিং মলসহ বিভিন্ন মার্কেটে তাদের দোকান ছিল।

বস্তায় ভরে রাখা কয়লার স্তূপের ওপরে বসে মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাতে দোকান বন্ধ করে বাসায় গেলাম। রাত চারটার দিকে খবর পেলাম মার্কেটে আগুন লেগেছে। দৌড়ে এসে দেখি আগুন আর প্রচুর ধোঁয়া। এই ধোঁয়ার কারণে দোকানের কাছেও আসতে পারিনি। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন সেই ছাই বস্তায় ভরে রক্ষার চেষ্টা করছি। আর তো কিছুই করার নেই।’

কত টাকার স্বর্ণ ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আনুমানিক ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকার স্বর্ণ ও গয়না ছিল। নিজেদের পাশাপাশি কাস্টমারদের অনেক গয়না ছিল। সব এখন কয়লা আর ছাইয়ের সঙ্গে মিশে গেছে।’

পাশের আরেক দোকানি চন্দ্রবিন্দু ফ্যাশনের মালিক কবির হোসেন বলেন, ‘দোকান থেকে আমার বাসা মাত্র এক মিনিট দূরে। তারপরও এসে কিছু রক্ষা করতে পারিনি। আমার অন্তত ৫০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে।’

দোকানের সামনের ফুটপাত ও রাস্তায় অবৈধ দোকানের কারণে ব্যবসায়ীরা মালামাল সরিয়ে নিতে পারেনি উল্লেখ করে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা লাখ লাখ টাকা পুঁজি খাঁটিয়ে ব্যবসা করি। আর মার্কেটের কিছু ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থে আমাদের দোকানের সামনের ফুটপাত ও রাস্তায় দোকান বসায়। আমরা ভয়ে মুখ খুলতে পারি না। কিছু বললে আর ব্যবসা করতে পারব না। এই সব দোকানের কারণে স্বাভাবিক সময়েও চলাচল করা যায় না। আগুনের পরে অনেক ব্যবসায়ী দোকান থেকে মালামাল বের করতে পারেনি। রাস্তাটা ক্লিয়ার থাকলে আরও বেশি মালামাল রক্ষা করা যেত।’

এর আগে বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১৭ ইউনিটের প্রায় ৬ ঘণ্টার চেষ্টা আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে ৷ যদিও এখনো বিভিন্ন দোকানে আগুন জ্বলছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, মার্কেটে ৩৬৫টি বৈধ দোকান ছিল। তবে ফায়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে বারবার নোটিশ দেওয়ার পরেও আমলে নেয়নি মার্কেটের দোকান মালিক সমিতি। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

সম্পর্কিত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন