Homeসারাদেশবাবার চাকরি ফেরত চেয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবন্ধী মেয়ে

বাবার চাকরি ফেরত চেয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবন্ধী মেয়ে

বড় বোনের স্বামীর করা মামলায় প্রায় এক বছর ধরে সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন ময়মনসিংহের তারাকান্দা শাখা সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার মাইনুল হক। আজ রোববার সকালে বাবার চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবি জানিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়েছিল তাঁর একমাত্র প্রতিবন্ধী মেয়ে। এ সময় তার মা-বাবাও উপস্থিত ছিলেন

প্রতিবাদকারী শারমিন হক বলে, ‘এক বছর ধরে বাবা-মা মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন। তা দেখে নিজেও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে যাচ্ছি। হাসি-খুশির সংসারটা ফুপার করা মিথ্যা মামলায় এলোমেলো হয়ে গেছে। আমার দাবি, সরকারসহ সোনালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে বাবার চাকরি ফিরিয়ে দেবে। আমি আমার বাবা-মাকে সুখী দেখতে চাই।’

শারমিন হকের মা নাসরিন হক নূপুর বলেন, ‘আমার স্বামী মাইনুল হক তাঁর পৈতৃক সম্পত্তির মধ্যে বাঁটোয়ারার মাধ্যমে ছয়টি ফ্ল্যাট পান। ডেভেলপার কানন প্রপার্টিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিবলাল শিল শিবু ১০ তলা ভবনে ফ্ল্যাটের কাজ অসম্পন্ন রেখে গা-ঢাকা দেন। পরে নিরুপায় হয়ে আমাদের ভাগের তিনটি ফ্ল্যাট অন্যত্র বিক্রি করে বাকি তিনটির ডেকোরেশন কাজ সম্পন্ন করি। আমরা কেন আমাদের ফ্ল্যাটের কাজ আগে সম্পন্ন করেছি, এ নিয়ে তাদের সঙ্গে বিরোধ বাধে।’

নাসরিন হক নূপুর আরও বলেন, ‘পরে আমার স্বামীর বড় বোনের জামাই আবু ছিদ্দিক খান তাঁকে মারধরসহ কয়েকটি ধারায় ফৌজদারি মামলা করেন। এ কারণে মাইনুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে তারা বিভিন্ন ভাবে হুমকিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাকে নিয়েও নানা অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছে। নিজেকে রক্ষা করতে তাদের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আমি বাদী হয়ে একটি মামলাও করি।’

এ বিষয়ে মাইনুল হক বলেন, ‘২৪ বছর ধরে সততার সঙ্গে চাকরি করে আসছি। কিন্তু আমার বড় বোন ও তাঁর স্বামী আবু ছিদ্দিক খানসহ তাঁদের সন্তানেরা বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে আমাকে চাকরিচ্যুত করতে নানাভাবে পাঁয়তারা করে যাচ্ছেন। ২০২২ সালের ২৩ মে মিথ্যা মামলা দিয়ে আবু ছিদ্দিক খান হেড অফিসে প্রতিনিয়ত যোগাযোগের মাধ্যমে আমাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করান।’

মাইনুল হক আরও বলেন, ‘মামলায় যে সময় উল্লেখ করা হয়েছে, তখন আমি অফিসে ছিলাম। তা সিসিটিভি ফুটেজসহ অন্য কর্মকর্তারাও ভালো জানেন। এখন নিজের বাসা ছেড়ে প্রতিবন্ধী মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে অন্যত্র বাসা ভাড়া করে থাকছি। এখন শুধু ভাতা পাচ্ছি। আশা করছি, আদালতে সত্যের জয় হবে। আমি আমার চাকরিটাও ফেরত পাব। তবে সামাজিকভাবে অনেকটা হেয় হয়েছি।’

এ বিষয়ে আবু ছিদ্দিক খান বলেন, ‘আমি অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক এজিএম। সেই সুবাদে পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করছি। কিন্তু শ্বশুরের রেখে যাওয়া ময়মনসিংহ নগরীর কালীবাড়ি রোডে ডেভেলপার দিয়ে নির্মিত ভবনে মাইনুল হক ও তাঁর স্ত্রী নাসরিন হক আমাদের নানাভাবে ঠকিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। যার দরুন নিজের প্রাপ্যটা ফিরে পেতে মামলা করেছি। অপরাধ করলে তো চাকরি যাবে, এটাই স্বাভাবিক। এখন তারা তাদের প্রতিবন্ধী মেয়েকে সামনে রেখে মানুষের সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলা বিবাদী পক্ষের আইনজীবী নুরুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, যে কয়েকটি ধারায় মামলা করা হয়েছে, তার বেশির ভাগই হয়রানি করার জন্য। বিষয়টি বিচারকও বুঝতে পেরেছেন। এ মামলায় হয়রানি ছাড়া অন্য কিছু হবে না।

সম্পর্কিত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন