একদিকে সৌদি আরব ও রাশিয়ার তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা, অন্যদিকে চাহিদা বাড়ছে চীনে। এসব কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে বাড়তে ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছোঁয়ার পথে।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে বৈশ্বিক বাজারে তেলের সরবরাহ কমানোর ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব ও রাশিয়া। একই সঙ্গে বিশ্বের শীর্ষ অপরিশোধিত তেল আমদানিকারক দেশ চীনে চাহিদা বাড়ছে। ফলে সরবরাহ সংকট নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) জ্বালানি তেলের দাম আরও বেড়েছে।
এদিন বেন্ট্র ক্রুডের দাম ৩৯ সেন্ট বা ০.৪ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেল ৯৪.৩২ ডলারে পৌঁছেছে। অন্যদিকে ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটে (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দাম ৫৩ সেন্ট বা ০.৬ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ঠেকেছে ৯১.৩০ ডলারে।
অপরিশোধিত তেলের উভয় বেঞ্চমার্কই গত তিন সপ্তাহ ধরে টানা বাড়ছে। এতে ব্রেন্ট ক্রুড ও ডব্লিউটিআইয়ের দাম গত বছরের নভেম্বরের পর সর্বোচ্চে স্তরে রয়েছে। অর্থাৎ, বিশ্ববাজারে তেলের দাম বিগত ১০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে অবস্থান করছে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকে ইউক্রেনে রাশিয়া অভিযানের সময় তেলের দাম যে পর্যায়ে উঠে গিয়েছিল, চলতি প্রান্তিকে বৈশ্বিক বাজারে তেলের দাম সে পর্যায়ে উঠার পথে রয়েছে।
এ বিষয়ে সিএমসি মার্কেটসের বিশ্লেষক টিনা টেং বলেছেন, চীনের নীতি, মার্কিন অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি এবং ওপেক প্লাসের সরবরাহ কমানোর ঘোষণার প্রভাবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী।
এএনজেডের বিশ্লেষকরা এক নোটে জানিয়েছেন, সৌদি আরব এবং রাশিয়ার সরবরাহ কমানোর কারণে বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে বৈশ্বিক তেলের বাজারে দৈনিক ২ মিলিয়ন ব্যারেল তেলের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। পরবর্তীতে ২০২৪ সালে তেলের মজুত কমে যাওয়ার কারণে বাজারে জ্বালানি তেলের দাম মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে।
ওপেক প্লাসের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চলতি বছরের শেষ নাগাদ সম্মিলিতভাবে দৈনিক ১.৩ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব এবং রাশিয়া। ওএএনডিএ’র বিশ্লেষক এডওয়ার্ড মোয়া রয়টার্সকে বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে জ্বালানি তেলের প্রতি ব্যারেল সহজেই ৯০ ডলারের ওপরে অবস্থান করবে।’
এদিকে, এএনজেড বলছে, ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি এবং দ্য অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজের (ওপেক) পূর্বাভাসের সঙ্গে সমঞ্জস্য রেখে বিশ্বব্যাপী তেলের চাহিদা বেড়ে দৈনিক ২.১ মিলিয়ন ব্যারেলে পৌঁছানোর পথে রয়েছে।
উল্লেখ্য, বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো ‘দ্য অরগানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম কান্ট্রিস’ বা ওপেক নামে পরিচিত। আবার ওপেকের বাইরে অন্যান্য তেল উৎপাদনকারী দেশ ও ওপেকের সদস্যদের একত্রে ওপেক প্লাস নামে অভিহিত করা হয়।