নাগর্নো-কারাবাখ নিয়ে দশকের পর দশক ধরে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে বিরোধ চলছে। গত সপ্তাহে সন্ত্রাস দমনের নামে আজারবাইজান এ অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করলে এ উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। তবে ২৪ ঘণ্টার মাথায় রাশিয়ার মধ্যস্থতায় দুপক্ষ যুদ্ধবিরতি সায় দিলে সংকট সমাধানের কিছুটা আশা দেখা দেয়। তবে গতকাল রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) কারাবাখ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের সব জনগণ এ অঞ্চল ছেড়ে পাশের দেশ আর্মেনিয়ায় চলে যাবে। একসঙ্গে এত মানুষের দেশত্যাগে এই সংকট আরও ঘনীভূত হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
কারাবাখ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। বর্তমানে আন্তর্জাতিকভাবে অঞ্চলটি আজারবাইজানের অংশ হলেও সেটি জাতিগত আর্মেনীয় অধ্যুষ্যিত এলাকা। সেখানে এক লাখ ২০ হাজার আর্মেনীয় বসবাস করেন। বিরোধপূর্ণ এ অঞ্চল নিয়ে এরই মধ্যে দুটি যুদ্ধে জড়িয়েছে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। প্রথমটি ১৯৯০-এর দশকে এবং দ্বিতীয়টি ২০২০ সালে। ২০২০ সালের যুদ্ধে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার আগে কারাবাখের বেশকিছু অঞ্চল নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় আজারবাইজান।
সম্প্রতি এ অঞ্চলে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে আবারও উত্তেজনা দেখা দেয়। এরই মধ্যে মাইন বিস্ফোরণ ও অন্য আরেকটি ঘটনায় আজারবাইজানের ১১ পুলিশ ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার খবর সামনে আসে। এমন পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেয় আজারবাইজান। তবে সামরিক অভিযানের ২৪ ঘণ্টার মাথায় আর্মেনীয়রা আত্মসমর্পণে রাজি হলে কারাবাখের ওপর সার্বভৌমত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে ঘোষণা করেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ। একই সঙ্গে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই দেশ।
যুদ্ধবিরতির পরপর আর্মেনীয়দের অধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছে আজারবাইজান। তবে তাদের এমন আশ্বাসে আশ্বস্ব হতে পারেননি কারাবাখের নেতারা। কারাবাখ রিপাবলিকের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ডেভিড বাবায়ান বলেছেন, আমাদের জনগণ আজারবাইজানের অংশ হিসেবে থাকতে চায় না। ৯৯ শতাংশ মানুষ আমাদের ঐতিহাসিক ভূমি ছেড়ে চলে যেতে চায়। তবে তারা ঠিক কখন আর্মেনিয়ায় যাবে তা এখনো স্পষ্ট না।