Homeজাতীয়শিক্ষার্থীকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব শিক্ষকের

শিক্ষার্থীকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব শিক্ষকের

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষার মূল চালিকা শক্তি হলো শিক্ষক। শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। শিক্ষকের অনেক দায়বদ্ধতা রয়েছে। শুধু পুঁথিগত বিদ্যা বিতরণ নয়, একজন শিক্ষার্থীকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তার আচার-আচরণের গুণগত পরিবর্তন সাধন, নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধের ভিত্তি স্থাপন করে দেওয়াও শিক্ষকের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

বৃহস্পতিবার ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ উপলক্ষ্যে বুধবার (৪ অক্টোবর) দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, জাতীয় পর্যায়ে ও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ উদযাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ উপলক্ষ্যে আমি সব শিক্ষককে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাচ্ছি। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘কাঙিক্ষত শিক্ষার জন্য শিক্ষক : শিক্ষক স্বল্পতা পূরণে বৈশ্বিক অপরিহার্যতা’, যা অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষক হলো সমাজ গঠনের মূল কারিগর। শিক্ষক নবীন প্রজন্মকে জ্ঞান বিতরণ করেন, স্বপ্ন দেখান, তাদের মধ্যে বিশ্বাসের বীজ বপন করেন। যার ফলে নবীন প্রজন্ম সুশিক্ষিত, দক্ষ, যোগ্য ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে। আমরা যদি সভ্যতার দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই প্রতিটি সভ্যতা গড়ার পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছেন শিক্ষকরা। ১৯৯৫ সাল থেকে ইউনেস্কো সারা বিশ্বে ৫ অক্টোবরকে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেয়।

তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই গভীর সত্যটি উপলব্ধি করেছিলেন বলেই শিক্ষকের মান-মর্যাদা ও জীবনমান উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১ লাখ ৬৫ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি এবং ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেন। জাতির পিতা বাংলাদেশের প্রথম বাজেটে শিক্ষাখাতে এদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২১ দশমিক ১৬ শতাংশ বরাদ্দ দেন। তিনি সব স্কুল-কলেজ পুনর্গঠন এবং নতুন বিদ্যালয়-কলেজ ভবন নির্মাণ করেন। নৈতিক শিক্ষার কথা বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠা করেন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার শিক্ষা দর্শনের আলোকে শিক্ষাখাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে গত ১৫ বছরে ব্যাপক উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। শিক্ষার হার ২০০৭ সালের ৪৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। আমরা একটি যুগোপযোগী জাতীয় শিক্ষা নীতি প্রণয়ন করেছি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন গ্রেড বৃদ্ধি করা হয়েছে। বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণার জন্য অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নে দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ। আমরা মনে করি শিক্ষকদের জীবনমানের উন্নয়ন না ঘটালে গুণগত শিক্ষা অর্জন সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে চাই, এজন্য প্রয়োজন একটি স্মার্ট জনশক্তি। সেজন্য আমরা একটি যুগোপযোগী কারিকুলাম প্রণয়ন করেছি। এই কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য আমাদের মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের সব শিক্ষক এই নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ ছোঁয়ায় গড়ে উঠবে একটি দক্ষ প্রজন্ম, যারা আমাদের উপহার দেবে একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’।

প্রধানমন্ত্রী ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

সম্পর্কিত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন