Homeআন্তর্জাতিকগাজায় প্রতি ১৫ মিনিটে ১টি শিশুর প্রাণ নিচ্ছে ইসরাইল

গাজায় প্রতি ১৫ মিনিটে ১টি শিশুর প্রাণ নিচ্ছে ইসরাইল

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গভীর উদ্বেগ উপেক্ষা করেই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বিরামহীন বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। হামলায় প্রতি মুহূর্তে প্রাণ হারাচ্ছে গাজাবাসী।

বেসরকারি দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, ইসরাইলের বিমান হামলায় গাজা উপত্যকায় প্রতি ১৫ মিনিটে ১টি শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। উপত্যকায় এই মানবিক সংকটের কথা বিবেচনা করে অবিলম্বে হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

গত ১২ দিন ধরে গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। আবাসিক ভবন থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্স কোনো কিছুই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না। এদিকে এরই মধ্যে পানি, খাবার ও জ্বালানি ফুরিয়ে আসছে। যার ফলে গাজায় মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

সেক্ষেত্রে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছে সেভ দ্য চিলড্রেন। ‍যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য সংস্থাটি মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘গাজায় ১১ দিনের বিমান হামলায় ১ হাজারের বেশি শিশু নিহত হয়েছে। গাজায় মোট প্রাণহানির এক তৃতীয়াংশ শিশু।’

গাজায় ইসরাইলের হামলায় এখন পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন প্রায় ১২ হাজার ৫০০ জন।

গাজার ২৩ লাখ মানুষ বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানির জন্য ইসরাইলের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু হামাসের আকস্মিক অভিযানের পর এই অঞ্চলের ওপর নতুন সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করে বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রশাসন।

জ্বালানির অভাবে এরই মধ্যে গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পুরো গাজা এখন কার্যত অন্ধকারে। পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় এরই মধ্যে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ফলে বাড়ছে পানিবাহিত রোগ। বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘও।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজার অধিবাসীদের মধ্যে পানীয় জলের অভাব ও ডায়রিয়া ও কলেরার মতো পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে।

বিবৃতি অনুযায়ী, গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি পানি শোধনাগার বন্ধ হয়ে গেছে। চালু থাকা সবশেষ সামুদ্রিক পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্টও বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাচ্ছে উপত্যকার কয়েক লাখ অধিবাসী।

সংস্থাটি আরও জানায়, মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকায় বাসিন্দারা মাত্র তিন ঘন্টার জন্য পানি পেয়েছে। যার থেকে উপকৃত হয়েছে মাত্র ১৪ শতাংশ মানুষ। অর্থাৎ ৮৬ শতাংশ বাসিন্দাই এখন আর পানি পাচ্ছে না।

ইউএনআরডব্লিউএ আরও বলেছে, এখনই পরিষ্কার পানি সরবারহ না হলে গাজাবাসী বিশেষত শিশুদের শীঘ্রই পানিশূন্যতায় ব্যাপক প্রাণহানি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সেভ দ্য চিলড্রেনের ফিলিস্তিন অফিসের পরিচালক জেসন লি বলেন, ‘পানির প্রবাহ ও গাজার শিশুদের জীবন এখন একই সূত্রে গাঁথা। যুদ্ধের অবসান বা যুদ্ধবিরতি না হলে হাজার হাজার শিশুর প্রাণহানি হবে।’

বিদ্যুৎ না থাকায় গাজার হাসপাতালগুলোতে জেনারেটর চালিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। কিন্তু জেনারেটর চালানোর জ্বালানিও দ্রুত শেষ হয়ে আসছে। জাতিসংঘের তথ্য মতে, গাজার হাসপাতালগুলোতে আর মাত্র ৪৮ ঘন্টার জ্বালানি অবশিষ্ট রয়েছে।

সম্পর্কিত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন