ওপেনিং জুটি নিয়ে বরাবরই দুশ্চিন্তায় বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে এই দুশ্চিন্তা যেন আরও বেড়ে যায়। চলতি বিশ্বকাপে সে দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছিল তামিম ইকবালের অনুপস্থিতি। লিটন দাসের সঙ্গে ওপেনিংয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম। তবে কিছুতেই রান পাচ্ছিলেন না এই তরুণ। লিটনও ইংল্যান্ড বাদে কোনো ম্যাচেই পাননি রান। অবশেষে ভারতের বিপক্ষে একসঙ্গে জ্বলে উঠলেন দুই ওপেনার। তাতে নিজেদের ২৪ বছরের পুরনো রেকর্ড ভাঙল টাইগাররা।
পুনেতে বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) ভারতের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিং করছে বাংলাদেশ। সাবধানী শুরুর পর এদিন দারুণ এক জুটি উপহার দিয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাসের ওপেনিং জুটি। ১৪.৪ ওভারে ৯৩ রানের ওপেনিং জুটি উপহার দেন তারা। এটিই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটির রেকর্ড। তাতে ভেঙে গেছে ২৪ বছরের পুরনো রেকর্ড।
এর আগে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি ছিল ৬৯ রানের। বাংলাদেশের খেলা প্রথম বিশ্বকাপে ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে এই জুটি গড়েছিলেন শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ ও মেহরাব হোসেন অপি। সেই ম্যাচটি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। আইসিসির তৎকালীন সহোযগী সদস্য বাংলাদেশ সেবারই প্রথম কোনো টেস্ট খেলুড়ে দলকে হারিয়েছিল। যে জয়ই পরে বাংলাদেশের টেস্ট স্টেটাস পাওয়ার পেছনে বড় অবদান রেখেছিল।
পুনেতে এদিন টাইগাররা খেলছে নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ছাড়াই। ইনজুরি থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠায় ভারতের বিপক্ষে খেলা হচ্ছে না সাকিবের। দলের সেরা তারকাকে ছাড়া খেলতে নেমে শুরুতে ভীষণ সাবধানী ব্যাটিং করেছে টাইগাররা। লিটন দাস প্রথম রান করতে খেলেছেন ১৩ বল। আরেক ওপেনার তানজিদ তামিমও খেলছিলেন রয়েসয়ে। বুমরাহ ও সিরাজের বলগুলো সামলাতে একটু ভুগছিলেনই বাংলাদেশের দুই ওপেনার। এ সময়েই যশপ্রীত বুমরার ইয়র্কার কোনমতে ঠেকান তামিম। প্রথমে দেখে মনে হয়েছে, তামিম নিরাপদেই খেলেছেন। তবে পরে আল্ট্রা-এজে দেখা গেছে, বল আগে প্যাডে লেগেছে। বল ট্র্যাকিং নিশ্চিত করেছে, রিভিউ নিলে আউটই হতেন তানজিদ। পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলের ঘটনা এটি।
তবে এরপরই খোলস ছাড়তে থাকেন দুজনই। দারুণ সব শট খেলতে থাকেন। এরই মধ্যে নবম ওভারে চোট পান বল করতে আসা হার্দিক পান্ডিয়া। সে ওভারের বাকি বলগুলো করেন বিরাট কোহলি। পার্টটাইমার কোহলির সেই তিনবল অবশ্য নিরাপদেই ব্যাট করেছে দুই টাইগার ব্যাটার।
পাওয়ার প্লেটা দারুণ কাটিয়েছে বাংলাদেশ। কোনো উইকেট না হারিয়েই সংগ্রহ করেছে ৬৩ রান। শার্দুল ঠাকুরের করা পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে টানা তিনটি চার মারেন তামিম। এদিন ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন তানজিদ তামিম। ৪৩ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে ৫১ রান করে কুলদীপ যাদবের বলে এলবিডাব্লু হয়ে যান তিনি।
আরেক ওপেনার লিটন দাসও পেয়েছেন অর্ধশতকের দেখা। ৭০ বলে ৭ চারে ৬৩ রানে ব্যাট করছেন তিনি। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৪ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান।