Homeতথ্য প্রযুক্তি২০৪১ সালের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১ কোটি কর্মসংস্থান: পলক

২০৪১ সালের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১ কোটি কর্মসংস্থান: পলক

তথ্যপ্রযুক্তি বা আইসিটি খাতে ২০৪১ সালের মধ্যে ১ কোটি কর্মসংস্থানের পাশাপাশি ১ লাখ স্টার্টআপ তৈরির লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।

বুধবার রাতে (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে গ্রামীণফোনের উদ্যোগে ‘জেলায় জেলায় স্মার্ট উদ্যোগ’ শীর্ষক দেশব্যাপী স্টার্টআপ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান।

আইসিটি খাতে নেয়া সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে পলক বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ পর্যন্ত আড়াই হাজার স্টার্টআপে ১৫ লাখ তরুণ তরুণীর কর্মসংস্থান হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১ কোটি কর্মসংস্থান ও ১ লাখ স্টার্টআপ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আগামী ৫ বছরের মধ্যে ঢাকার বাইরে থেকে অন্তত একটি ইউনিকর্ন কোম্পানি বের করার কথাও জানান তিনি।

পলক আরও বলেন,
আমাদের তরুণদের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে কর্মসংস্থান সৃষ্টি। কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে চাকরিমুখী না হয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে সাহসী হতে হবে।

স্টার্টআপের তহবিল যোগানোর বিষয়ে পলক বলেন, স্টার্টআপের ক্ষেত্রে প্রচলিত পদ্ধতির ব্যাংকিং ঋণ কখনই সফল হয় না। কারণ একটি স্টার্টআপ শুরু হয় শূন্য থেকে অসীম একটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে। সেখানে প্রচলিত সুদের হার ভিত্তিক ব্যাংক ঋণ চাপ সৃষ্টি করবে একজন উদ্যোক্তার ওপর, যা তার উদ্যোগের বিকাশে বাধার সৃষ্টি করবে। যদি উদ্যোক্তার ঘাড়ে ঋণের বোঝা চেপে বসে তবে তার মধ্যে থাকা উদ্ভাবনী চিন্তা ও ধারণার পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হতে পারবে না।

এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালির উদাহরণ টেনে পলক বলেন, কেন যুক্তরাষ্ট্রে সিলিকন ভ্যালি সফল হয়েছে কিন্তু অন্য দেশগুলো তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি তা থেকে শিক্ষা নিতে হবে।

স্টার্টআপের সফলতার জন্য উপযুক্ত কর্মপন্থা খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন পলক। এ প্রসঙ্গে ২০১৪ সালে নিজের সিলিকন ভ্যালি সফরের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করেন তিনি। দেশের এসএমই খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের তথ্য প্রযুক্তির সেবার আওতায় আনার বিষয়টি উল্লেখ করে দেশের শিক্ষা, মেডিকেল, ট্যুরিজমসহ বিভিন্ন খাতে স্টার্টআপ তৈরির ওপর জোর দেন পলক।

পাশাপাশি ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ৬৪টি জেলা থেকে ৬৪০০ স্টার্টআপ তৈরি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬৪ হাজার স্টার্টআপ তৈরির আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী পলক। এ সময় সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের স্টার্টআপে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গত ছয় বছরে এ খাতে ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে।

স্টার্টআপ কালচারটা শুধু শহরে নয়, গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ১৫ বছর আগে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে যে ধরনের সুযোগ সুবিধা ছিল, তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পর এখন জেলা পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। জেলা পর্যায় সুবিধা এখন উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। একটি গ্রামকে শহরে পরিণত করতে যে মৌলিক চাহিদা পূরণ করা, যেমন প্রত্যেক ঘরকে আলোকিত করা, ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করা, পাকা রাস্তা করাসহ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা তার প্রত্যেকটাই বাস্তবায়ন করছে সরকার।

২০৪১ সালের মধ্যে মাথাপিছু আয় সাড়ে ১২ হাজার ডলারে উন্নীতকরণ, আইসিটি সেক্টরে ১ কোটি কর্মসংস্থান তৈরি এবং আইসিটি সেক্টরে ৫০ বিলিয়ন ডলারের সমমূল্যের একটি ইন্ডাস্ট্রি তৈরির আশা প্রকাশ করেন তিনি।

পলক আরও বলেন, জেলাগুলো থেকে তরুণ উদ্যোক্তাদের খুঁজে বের করতেই এই ‘জেলায় জেলায় স্মার্ট উদ্যোক্তা’ তৈরির ক্যাম্পেইন শুরু করা হয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগ হাতে নেয়ায় গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে একটি জ্ঞানভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক, স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরির জন্য এই উদ্যোগ একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্টার্টআপ দি লিগ্যাল সার্কেলের প্রতিষ্ঠাতা অনিতা গাজী রহমান, শেয়ার ট্রিপের প্রতিষ্ঠাতা সাদিয়া হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ আশিকুর রহমান প্রমুখ।

সম্পর্কিত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন