Homeজাতীয়যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে জাতি দায়মুক্ত হয়েছে : প্রধান বিচারপতি

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে জাতি দায়মুক্ত হয়েছে : প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে জাতি দায়মুক্ত হয়েছে। অপরাধীদের সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আমরা আইনের সব নিয়মনীতি মেনে নির্মোহভাবে বিচার কাজ করেছি। সেই বিচারে তাদের সাজা হয়েছে। পরবর্তীকালে বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে ।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতি আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় জাদুঘরের শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মিলনায়তনে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, একটি স্বাধীন, সার্বভৌম, অসাম্প্রদায়িক, অর্থনৈতিক শোষণমুক্ত, গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যই হলো সংবিধানের মূল স্তম্ভ। এই মূল স্তম্ভকে সামনে রেখেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। দেখেছিলেন দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যহীন ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন। তার স্বপ্ন ছিল ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার। তার সেই স্বপ্ন এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাওয়া সংবিধানে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে রাষ্ট্র কাঠামো পেয়েছি, তার ভিত্তি হলো আমাদের সংবিধান। এই সংবিধান দাঁড়িয়ে আছে চার মূলনীতির ওপর। প্রধান বিচারপতি পদে শপথ নিয়েছি এই সংবিধান রক্ষার। সংবিধানের এই চার মূলনীতি রক্ষায় আমরা সচেষ্ট থাকব।

ওবায়দুল হাসান বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার। এজন্য প্রয়োজন দল ও মত পার্থক্য ভুলে একসঙ্গে কাজ করা ও একসঙ্গে পথ চলা। এটা আমরা সকলে মিলে একসঙ্গে করতে পারব বলেই আমার বিশ্বাস।

মামলা জট প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনের যে ফাঁক-ফোকর রয়েছে সেই ফাঁক-ফোকরে দরখাস্তের পর দরখাস্ত দিয়ে বিভিন্ন রকমের আবেদন করা হয়। এই আবেদনের মাধ্যমে মামলার এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ঘায়েলের চেষ্টায় থাকেন। এ কারণে মামলার জট কমাতে আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। আইনজীবীদেরও বুঝতে হবে এটা একটা পেশা, ব্যবসা নয়। আর বিচারকদের দায়িত্ব হচ্ছে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করা।

তিনি বলেন, কোনো কোনো জেলায় ১২৫ ভাগ মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে। এটা চলমান থাকলে ৪/৫ বছরের মধ্যে মামলা জটকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ১৯৮৪ সালের পর থেকে আইনগুলো বাংলায় প্রণয়ন করা হচ্ছে। আগের আইনগুলো ইংরেজি ভাষায়। এগুলো বাংলায় করতে হলে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের অনেক বিচারক এখন বাংলায় রায় দিচ্ছেন। তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন বাংলায় রায় দিতে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী একজন আইটি বিশারদ, তাকে বলব আরও সহজ কোনো অ্যাপস করা যায় কি না, যাতে ইংরেজি রায়গুলো সহজ ও সাবলীল বাংলায় অনুবাদ করা সম্ভব হয়।

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, আমাদের বিচার ব্যবস্থায় বাদী-বিবাদী, বিচারক ও আইনজীবী সবাই বাঙালি। তাহলে উচ্চ আদালতে রাষ্ট্র ভাষা বাংলা কেন কার্যকর হবে না। উচ্চ আদালতের বিচার কাজে বাংলার প্রচলনে প্রধান বিচারপতি উদ্যোগ নেবেন, সেটাই জনগণের দাবি।

বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতির সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) মো. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান ও সংগঠনের মহাসচিব ডিএমপি (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।

অনুষ্ঠানে বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয়টি জেলা সমিতির পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতিকে শুভেচ্ছা স্মারক উপহার দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন