Homeবিনোদনবঙ্গবন্ধুর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয় থাকছে সিরিজে

বঙ্গবন্ধুর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয় থাকছে সিরিজে

দুটি অ্যানিমেশন সিনেমার পর এবার সোহেল মোহাম্মদ রানা নির্মাণ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ১০ পর্বের সিরিজ ‘খোকা’। আগামী মাসেই বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার হবে অ্যানিমেশন সিরিজটি। নতুন সিরিজ ও সাম্প্রতিক কাজের খবর নিয়ে রানার সঙ্গে কথা বলেছেন শিহাব আহমেদ।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ১০ পর্বের অ্যানিমেশন সিরিজ ‘খোকা’ বানাচ্ছেন। সিরিজের প্রেক্ষাপট কী?

বঙ্গবন্ধুর ছোটবেলা থেকে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত দেখানো হবে। রাজনৈতিক জীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয় থাকছে সিরিজে। তবে বঙ্গবন্ধুর ছোটবেলার ইভেন্টগুলো বেশি পাওয়া যাবে। যে গল্পগুলো কখনো বলা হয় না বা দেখানো যায়নি, তা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ১০ পর্বের সিরিজ বলেই বিস্তারিত দেখানোর সুযোগ পেয়েছি।

কোন চ্যানেলে প্রচার হবে সিরিজটি?
সেপ্টেম্বর থেকেই একসঙ্গে বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলে প্রচারের পরিকল্পনা আছে। কয়েক দিনের মধ্যেই তারিখ চূড়ান্ত হবে।

আগেও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে দুটি অ্যানিমেশন সিনেমা বানিয়েছেন। সে সম্পর্কে জানতে চাই।
‘মুজিব আমার পিতা’ সিনেমাটি বানিয়েছিলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ বই থেকে। এরপর বানিয়েছি ‘মুজিব ভাই’। বঙ্গবন্ধু যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শুরু করলেন, তিনি সবার মুজিব ভাই হয়ে উঠলেন। সেই সময় থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত সময়টাতে বঙ্গবন্ধুর জার্নিটা তুলে ধরা হয়েছে।

সম্প্রতি বঙ্গভবনে প্রদর্শিত হয়েছে মুজিব ভাই সিনেমাটি; এটি দেখার পর রাষ্ট্রপতির প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
এটা দেখার পর তিনি অবাক হয়েছেন। নতুন একটি মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার বিষয়টি তাঁর খুব ভালো লেগেছে।

নির্মাণে অ্যানিমেশনকে বেছে নেওয়ার কারণ কী?
অ্যানিমেশনে স্বাধীনতা বেশি পাওয়া যায়। এখানে নিজের মতো করে দৃশ্য আঁকা যায়। লাইভ প্রোডাকশনে প্রয়োজনে সেট বানিয়ে কাজ করতে হয়। সবকিছু মনের মতো ফুটিয়ে তোলা যায় না। অ্যানিমেশনে আপনি যেভাবে দৃশ্যগুলো কল্পনা করছেন, ভিজ্যুয়ালি সেটাই করা যায়। তাই স্টোরি টেলিংয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ করে ঐতিহাসিক কোনো ঘটনা বর্ণনায় অ্যানিমেশনকে বেস্ট মনে হয়।

অ্যানিমেশন নিয়ে কাজের শুরুটা কীভাবে?
২০১৪-১৫ সালের দিকে শুরু। শুরুতেই আন্তর্জাতিক প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল। তখন ফ্রিল্যান্সার অ্যানিমেটর হিসেবে কাজ করতাম। অভিজ্ঞতা হওয়ার পর মনে হলো, নিজের দেশের জন্য কাজ করা উচিত। শুরু করলাম ‘মুজিব আমার পিতা’ সিনেমার কাজ।

এ ব্যাপারে কারও সহযোগিতা পেয়েছেন?
শুরুটা নিজেই করেছি। এরপর বেশ কয়েকজন শিল্পীর সহযোগিতা পেয়েছি, চারুকলা থেকে সাপোর্ট পেয়েছি। বিশেষ ধন্যবাদ দিতে চাই আইসিটি মন্ত্রণালয়কে। যখন মুজিব আমার পিতা সিনেমার প্রজেক্ট জমা দিই, তাদের কাছে বিষয়টি অপরিচিত ছিল। নতুন একটা মাধ্যম, বড় প্রজেক্ট, বঙ্গবন্ধুর মতো সেনসিটিভ বিষয়—সব মিলিয়ে তারা একটু দ্বিধায় ছিল। প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক ভাই আমাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন। তিনি আমাদের ওপর ভরসা করেছিলেন বলেই সিনেমাগুলো নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। অ্যানিমেশনের প্রতি তাঁর আলাদা ভালোবাসা আছে। সময় পেলে তিনি স্টুডিওতে এসে আমাদের কাজ দেখে গেছেন। স্ক্রিপ্ট ও সংলাপ নির্বাচনেও সাহায্য করেছেন।

দুটি সিনেমা ও সিরিজ নির্মাণ করলেন। বাংলাদেশে অ্যানিমেশনের বাজার কেমন মনে হচ্ছে?
২০০০ সালের পরে এ দেশে ‘মুরগি কেন মিউটেন্ট’, ‘মন্টু মিয়ার অভিযান’-এর মতো অ্যানিমেশন নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু সেটা কন্টিনিউ করা যায়নি। নির্মাতারা লোকাল মার্কেটেই বাজার বৃদ্ধি করতে চেয়েছিল। কিন্তু সে সময় আমাদের লোকাল মার্কেট পর্যাপ্ত ছিল না। সময় বদলেছে। এখন গ্লোবালি কাজ করা যাচ্ছে। অ্যানিমেটররা চাইলেই আন্তর্জাতিক বাজারে কাজ করতে পারছেন। অ্যানিমেশনের বাজার তাই এখন তুলনামূলক ভালো। আমাদের দেশেই বিভিন্ন স্টুডিও তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়া সরকার যেহেতু অ্যানিমেটরদের সহযোগিতা করছে, তাই আমার বিশ্বাস, ১০ বছর পর আমাদের দেশে অ্যানিমেশন ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠবে।

যাঁরা অ্যানিমেশন নিয়ে কাজ করছেন, তাঁদের নিয়ে কতটা আশাবাদী?
অ্যানিমেটর হওয়া কঠিন এবং জটিল এক জার্নি। এই জার্নির পুরোটা সময় যুক্ত না থাকলে কাজ করতে গেলে নানা ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে হয়। তখন অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েন। নতুনদের জন্য আমি একটি ইনস্টিটিউট গড়ার পরিকল্পনা করছি। আশা করি, আগামী বছরই কার্যক্রম শুরু করতে পারব। সেখানে অ্যানিমেটরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বিদেশি অ্যানিমেটর ও স্টুডিওগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হবে। এ দেশের অ্যানিমেটররা যথেষ্ট মেধাবী। সঠিক গাইডলাইন পেলে অনেক কিছু অর্জন সম্ভব।

সামনে নতুন কাজ কী আসছে?
‘রূপা’ নামের নতুন একটি সিরিজ নিয়ে কাজ করছি। এখন পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। এটি অ্যাডভেঞ্চারধর্মী গল্প। এখানে কিশোরী রূপা সোশ্যাল ক্রাইসিসগুলোর বুদ্ধিদীপ্ত সমাধান দিয়ে থাকে। এরপর তৈরি করব মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক শিশুতোষ সিনেমা ‘একটি ফুলকে বাঁচাব বলে’।

কথোপকথন: সোহেল মোহাম্মদ রানা।

সম্পর্কিত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন