Homeঅর্থনীতিএক ধাক্কায় স্বাস্থ্যের প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে ১৩শ কোটি টাকা

এক ধাক্কায় স্বাস্থ্যের প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে ১৩শ কোটি টাকা

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পের ব্যয় এক ধাক্কায় বাড়ছে ১৩শ কোটি টাকার বেশি। প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে এ ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ৫০০ বেডের হসপিটাল ও এনসিলারি ভবন ইন যশোর, কক্সবাজার, পাবনা ও আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ এবং জননেতা নুরুল হক আধুনিক হাসপাতাল, নোয়াখালী’ প্রকল্পটি প্রথম সংশোধনের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

একনেক কার্যপত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি টাকা। যা প্রথম সংশোধনীতে ৩ হাজার ৪১৫ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে মূল অনুমোদিত ব্যয়ের তুলনা সংশোধনীতে ব্যয় বাড়ছে ১ হাজার ৩১২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এছাড়া, প্রকল্পটি প্রথমে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুনে বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে না পারায় বর্তমানে প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে মেয়াদ বাড়িয়ে জুলাই ২০১৮ হতে জুন ২০২৬ সাল পর্যন্ত করা হচ্ছে। প্রকল্পটি যশোর, পাবনা, কক্সবাজার জেলার সদর এবং নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলায়।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে, যশোর, কক্সবাজার, পাবনা ও নোয়াখালীর জেলাসমূহের বিদ্যমান মেডিকেল কলেজগুলোর প্রত্যেকটির জন্য ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট ৪টি হাসপাতাল স্থাপনসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক ভবন নির্মাণ; টারশিয়ারি লেভেলের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ; আধুনিক চিকিৎসাসেবার মাধ্যমে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন এবং ডাক্তার ও অন্যান্য পেশাজীবীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি।

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৭৮৭ বর্গমিটার আবাসিক ভবন নির্মাণ, ৪৫ হাজার ৭৮৭ বর্গমিটার অনাবাসিক ভবন নির্মাণ; বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ক্রয়; যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি ক্রয়; আসবাবপত্র ক্রয়; ১১টি যানবাহন (জীপ, অ্যাম্বুলেন্স, মোটরসাইকেল) ক্রয় এবং ০.৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ ও ক্রয়।

প্রকল্পটি সংশোধনের কারণে বলা হয়েছে, ভারতীয় এলওসি-২ এর আওতায় নমনীয় ঋণ বাদ; পিডব্লিউডির রেট সিডিউল পরিবর্তন; মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিভাগের সংখ্যা বৃদ্ধি; মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম পুনর্নির্ধারণ; জাতীয় গ্রিডের বৈদ্যুতিক টাওয়ার স্থানান্তর; আবাসিক চিকিৎসক ও আবাসিক সার্জনের জন্য আবাসন অন্তর্ভুক্তি; সাব-স্টেশন এবং জেনারেটর স্থাপন; অধিগ্রহণকৃত ভূমির মূল্য পরিশোধ এবং প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি।

পরিকল্পনা কমিশন জানায়, প্রকল্পটি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপিতে) ১০ লাখ (রাজস্ব ৫ লাখ ও মূলধন ৫ লাখ) টাকা বরাদ্দসহ ‌‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ৫০০ বেডের হসপিটাল অ্যান্ড এনসিলারি ভবন ইন যশোর, কক্সবাজার, পাবনা ও আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ এবং জননেতা নুরুল হক আধুনিক হাসপাতাল, নোয়াখালী’ শিরোনামে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ জানায়, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় স্বাস্থ্য জনসংখ্যা ও পুষ্টি (এইচপিএন) খাতে অভীষ্ট হলো ‘সুস্থ পরিবেশে মানসম্পন্ন ও সমতাভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার প্রাপ্যতা প্রসারিত করে সমস্ত নাগরিকের জন্য সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ উপভোগ নিশ্চিত করা’। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ৪টি জেলা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জনগণের স্বাস্থ্যসেবাসহ জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ -এর অনুচ্ছেদ ৫.৫ এ বর্ণিত অন্যতম লক্ষ্য ‘জেলা পর্যায়ে হাসপাতাল সুবিধা শক্তিশালীকরণ’। এছাড়া, ‘সকল বয়সী সকল মানুষের জন্য সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিশ্চিতকরণ’ এসডিজি-২ অভীষ্টের সাথে আলোচ্য প্রকল্পের উদ্দেশ্যর সম্পৃক্ততা রয়েছে। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে প্রকল্পটি ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও এসডিজি’র অভীষ্টের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সাথে সংগতিপূর্ণ।

পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিৎ কর্মকার জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে যশোর, কক্সবাজার, পাবনা ও নোয়াখালী জেলায় বিদ্যমান মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমসহ এ জেলাগুলো ও পার্শ্ববর্তী জেলার জনগণ স্বল্পমূল্যে আধুনিক ও বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা পাবে। যার ফলে এসব অঞ্চলের জনগণের স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়ন সম্ভব হবে। তাছাড়া, ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পেশাজীবীদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র প্রসারিত হবে। এজন্যই প্রকল্পটি একনেক সভায় সংশোধনের জন্য তোলা হয়েছে।

সম্পর্কিত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন